-বাবু,সকালে তুমি কী খেয়েছ?
-কিছু খাই নি।
-দুপুরে খাও নি?
-এইতো খাচ্ছি। (হাতে ১টি শসা)
-তুমি খাবার কেনার টাকা পাও কীভাবে?
-সবার কাছে চেয়ে নেই।
-আজ কত উঠেছে?
(সে ২ টাকার ৩টা নোট দেখাল)
এতক্ষণ যা বলছিলাম তা হল ফুটপাতে রুবেল নামের ছয় বছরের একটি ছেলের শুক্রবারের দিনের ঘটনা। যেদিন আমরা মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা মাছ-মাংস খাওয়ার চেষ্টা করি সেদিনটিতেও হয়তো রুবেল নামের অনেক ছেলেকে অনাহারে কাঁটাতে হয়। দুমুঠো খাবারের আশায় তারা ডাস্টবিনেও অভিযান বাকী রাখে না। হয়তো রাস্তার কোন কুকুরের সাথে যুদ্ধ করে এদের খাবারের জগতে অনেক সময় টিকে থাকতে হয়। এদের ঘুম ভাঙ্গে না মায়ের কিংবা দাদীর সুমধুর ডাকে। ঘুম ভাঙ্গে ট্রেন কিংবা বাসের কৃএিমতাময় শব্দে।
দু'বেলা খাওয়াই যাদের কাছে কঠিনতম কাজ শিক্ষা তাদের কাছে অনেক দূরের ব্যাপার।
আমরা সেইসব অবহেলিত শিশুদের নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছি যারা স্বপ্ন দেখতেই ভূলে গেছে। আগামী দশকে তারাই হবে হয়তো সোনার বাংলাদেশের কারিগর। আমরা উচ্চ শিক্ষায় অধ্যয়নরত তরুণরা মাঠে নেমেছি নিঃস্বার্থতাহীনভাবে কিছু ফুলের পাপরিকে ঝড়ে পড়ার হাত থেকে বাচাঁতে। আমরা রুবেলের মতো কিছু অবহেলিত শিশুদের স্বপ্ন দেখাতে শেখাব এবং তা পূরণ করতে সেরা চেষ্টা করব। মানুষ মানুষের জন্য, এমন মানবিকতার টানে আপনারাও এগিয়ে আসুন নিজেদের অবস্থান থেকে।.......
.................এবারের ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে আমরা উদ্ভোধন করতে যাচ্ছি পথশিশুদের স্বপ্নের "PACE Iinternational Kids School" যার পাঠদান পদ্ধতি একটি আন্তর্জাতিক মানের স্কুলের মতো চেষ্টা হবে। পথশিশুদের শিক্ষা যদি পথশিশুদের মতো হয় তাহলে সারাজীবন তারা অবহেলিতই থাকবে। এছাড়াও ঈদে আমরা চরাঞ্চলের কিছু হত দরিদ্র শিশুদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে যাচ্ছি। আমাদের পৃষ্টপোষকতা করে যাচ্ছেন রংপুর সিটি কর্পোরেশন, BIAM Laboratory School and College এবং Police Lines School and College.
আমরা ইতিমধ্যে রংপুরে ৬ টি, সিলেটে ১টি,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে ১ টি, চন্দ্রিমা উদ্যানে ২ টি মিটিং সম্পন্ন করেছি। গত ২৬শে মার্চে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গনে আমরা পথশিশুদের নিয়ে একটি ব্যতীক্রমধর্মী অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছি যার অংশ হিসেবে ছিল টি-শার্ট বিতরণ,চিএাঙ্ন ও বর্ণমালা প্রতিযোগিতা,মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রযেক্টরে দেখানো,কার্টুনের বিভিন্ন মজার অংশগুলো দেখানো,খাবার বিতরন এবং বিনামূল্যে ব্লাড গ্রুপিং। অনুষ্ঠানটিতে মিডিয়া কভারেজে ছিল SA tv,ETV,যুগের আলো,করতোয়া,পথম আলো ইত্যাদি ইলেকট্রনিক্স এবং প্রিন্ট মিডিয়া। আমরা ইতিমধ্যে শিশুদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ৪টি ক্যাম্পিং করেছি।
এবারে আসুন জেনে নেই 'পেইস' এর লক্ষ্য,উদ্দেশ্য এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ
১)'পেইস' একটি অলাভজনক,অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান যা অবহেলিত, সুবিধাবঞ্চিত এবং পিছিয়ে পড়া মানুষদের নিয়ে ভাবে এবং তাদের নিয়ে কাজ করে।
২) আমরা প্রথমেই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করছি, তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সেরা চেষ্টা দিচ্ছি।
৩) অবহেলিত শিশুদের অন্যতম মৌলিক চাহিদা 'শিক্ষা' নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবারের ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে উদ্ভোধন করতে যাচ্ছি স্বপ্নের 'পেইস ইন্টারন্যাশনাল কিডস স্কুল'। স্কুলের পাঠদান দেশসেরা স্কুলগুলোর পাঠদানের সাথে সাদৃশ্য রেখেই করা হবে। আমাদের শিশুরা প্রাথমিক স্তর পেরুতেই শুদ্ধ বাংলা বলার পাশাপাশি ইংরেজিতে কথা বলতে পারবে বলে আশা করছি। তাদেরকে নিয়ে ইতোমধ্য একটি 'পরীক্ষামূলক কর্মসূচি' সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।
৪) আমরা ইতোমধ্যে কুড়িগ্রামে একটি পাঠাগার তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। একটি সমৃদ্ধাশালী এবং কার্যকর পাঠাগার দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।
৫) বন্যার সময় চরাঞ্চলে শুকনা খাবার,খাবার-স্যালাইন,মেডিকেল ক্যাম্পিং করে ঔষধ বিতরণ এবং পোশাক বিতরণ,ঈদ উপলক্ষে শিশুদের মাঝে পোশাক বিতরণ,তাদের সাথে সময় দিয়ে তাদের জীবনের গল্প শোনা আমাদের কার্যক্রমের অন্তর্ভূক্ত। উল্লেখ্য আমরা গত ১মে তে মহান শ্রমিক দিবস উপলক্ষে বৃদ্ধ রিকশাওয়ালাদের মাঝে টি-শার্ট বিতরণ করেছি।
৬) আমরা শিক্ষার পাশাপাশি আর একটি অন্যতম মোলিক চাহিদা 'চিকিৎসা' নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তৈরি করেছি পরিপূর্ণ মেডিকেল টিম যা 'পেইস' এর চিকিৎসা বিভাগের অন্তর্ভূক্ত। সময়মত বিনামূল্যে ক্রিমিনাশক টেবলেট সরবরাহ,মেডিকেল ক্যাম্পিং,ঔষধ সরবরাহ আমাদের চিকিৎসা বিভাগের অন্যতম কার্যাবলী।
৭) বিভিন্ন ক্যাম্পিং, সেমিনার,মিটিং,মঞ্চনাটক এর মাধ্যমে বাল্যবিবাহ,শিশুশ্রম সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি এবং গ্রামে-গ্রামে,মহল্লায়-মহল্লায় এসবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা আমাদের অন্যতম কাজ।
৮) ধীরে ধীরে সকল মৌলিক চাহিদা পূরণ করাই আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
পেইস একটি অলাভজনক,অরাজনৈতিক সংগঠণ।আপনাদের ভালবাসায় আমরা ৩০ টা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সদস্য কনফার্ম করেছি। BRUR,DU,SUST,BUET,HSTU এ আমাদের ব্রান্ঞ হতে যাচ্ছে। কিছু উদ্যম তরুণ কাজ করছি কিছু স্বপ্ন পূরণের আশায়। তবে সে স্বপ্ন নিজের জন্য নয়। একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য সবার জন্য।আপনিও হতে পারেন আমাদের একজন। হতে পারেন "পেইস"পরিবারের একজন গর্বিত সদস্য।
Facebook Page: https://www.fb.com/pace.org.bd
FacebooK Group: https://www.fb.com/groups/pace.org.bd